মেসবা আলম অর্ঘ্য

 

মেসবা আলম অর্ঘ্যের কবিতা



পাউরুটি


গুড় যদি দিলে প্রভু 
তোমার অসীম পাউরুটি
সামান্য কেটে দিও তা’ও
অধমের ভালে      

বন্ধুর হেটোরোসেক্সুয়াল বউ   

আর তাঁর জীবাশ্ম মা
এমত সুষমা— 

গুড় নাচ
গুড় গান
গুড়েবালি অম্লান
মস্তকবীথি... 

মিথিকাল,
প্রায় এথিকাল,   ইহ-পর গুড়... খাল নদী...    

কেটে দিও— 
লালাগম্য, মালাগম্য, বোধগম্য করে

যদি গুড় দিলে প্রভু   



ভোরবেলা সাউন্ডস্কেপ 


পাশের বাড়ির দেয়াল চুইয়ে নেমে আসছে
Sonata quasi una fantasia—

ঘাসের উপর ফিঙে

বেড়ার উপর রোদ

ছেঁড়া ফাড়া কোট     

ফ্যান্টাসিয়া। 

কে যেন বিরাট দূরে  
পড়ছে ফেটে ফেটে 

ঘাসের ডগায় পানি 

ধাতব চিৎকার

পাশেই ঘরবাড়ি

“আমার প্রিয়া হোথা
গিয়েছে কাল রাত্রে
স্বামীর সাথে থাকতে”

* *

সোনাটা মুনলাইট

সুস্থ মানুষ , মিষ্টি মানুষ
ওই যে ওই যে 
পেন্সিলাগ্র হিল্‌

একটা ভারী লোহার বাক্য
টেনে খোলা হচ্ছে   




মিসঃ বিন


স্বাগত মিসঃ বিন
আমি তোমার মিষ্টি পুতুল।

শোবার আগে দেহখানি
আদর করে শুইয়ে দিও  
দেরাজে তোমার—
শান্তি পোহাবো।

সনির্বন্ধ মুন্ডুখানা মম
বেরিয়ে লটকে থাকে যদি 
লাগানোর কালে

ফুলের মতো ছিঁড়ে নিও,
দেরাজ খুলে গুঁজে দিও,
আমার দুই 
বাহুর আলিঙ্গনে



কলম


লোহার খাতায়

কলম নড়ে উঠে শান্ত হয়ে যায়

বোতলে পানি দিয়ে রাখা

কলম থেকে গাছ হবে  

ভবিষ্যতের নিয়মে?

চুপ

এই কিছুদিন -

লোহার পৃষ্ঠার মতো হালকা আমি

প্রত্যাশাহীন




ভেনেসিয়া


আজকে আমার বন্ধুর সাথে
হোটেলে উঠেছি। হয়তো কাল চলে যাওয়া উচিৎ!
উচিৎ কেন, চলে যাবো। 

কিন্তু এই শস্তা এবং প্রাচীন ৪০১ নম্বরে
আমাদের আগে যে যে ট্রাইব এসেছিল
এবং পরে যারা আসবে 
সবার উদ্দেশ্যে,
আমার পিতার আঁকা নগ্ন মেয়েটির উদ্দেশ্যে,
একটা চুকা টেবিল ল্যাম্পের উদ্দেশ্য
আপাতত 
আমার বন্ধু ছবি তুলছে আর
ক্রমাগত বলে যাচ্ছে— "তোমার উচিৎ না
উচিৎ না!"

* *

আমার বন্ধু সবার জন্য জানালা খুলে দেয়
এবং জানায়, হাতে-কলমে ও আর লিখতে পারে না

কিন্তু এই ৪০১ নম্বরে
আগে যারা ছিল, 
আমাদের আগে আর
পরে যারা—  
সবার জন্য তিনটা কাগজ এনেছে সে

খুব শাদা আর সীমিত, 
লিখতে গেলেই বেঢপ ভাবে ফুলে উঠছে শব্দ 

* *

একটা মাত্র কাগজ অবশিষ্ট। ছোট করে লিখতে হবে। নয়তো অনেক বেশি প্রত্যাশা করবো। তখন আর লেখাই যাবে না। জায়গাও থাকবে না। সকাল হবে। দুপুর হবে। রাত হবে। আবার সকাল। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার বন্ধু নাক ডাকছে। জানালা দিয়ে রাস্তার আলো আসছে। কাগজ প্রায় শেষ। ভয় পাচ্ছি। কালরাতে যেই ফরাসিনীর সাথে বারান্দায় ছিলাম, ওর জিবের আঁকিবুকি। ভেনেসিয়া, একটা শব্দহীন ছুরি। পরে, বারান্দায় গিয়ে কিন্তু চুমু খেতে চাইলো না আর। খরগোশের মতো সিগারেট খেলো। শেষরাতের গলির উপর ভিন্ন ভিন্ন ট্রাইব। খুব চেনা একটা নৃত্য। কাতর, ঘোলাটে। সবার সাথে হাঁটলাম। হাসলাম। কাগজটা সত্যি শেষ। ভেনেসিয়া সত্যি। সত্যি সত্যি ভাল একটা কাগজে বেশি বড় করে লেখা যায় না। তা না হলে এমন হতো না।


1 comment:

  1. দারুণ মচমচে কথামালা! ভাল্লাগলো অনেক --

    ReplyDelete

Facebook Comments