তানিয়া চক্রবর্তী




তানিয়া চক্রবর্তীর কবিতা

রক্তচাপজনিত ৭


জন্মদিনের পুতুল ২০১৬



তেইশ তারিখ রাত একটায় একটা খিল সরল
জন্মের দিন থেকে একটু দূরে
বুঝলাম, যে ছন্দ ঈশ্বর বানাচ্ছেন
সেইছন্দ তিনিই কাটবেন
চারটে বছর একটাই দিনে ঘণ্টা বাজত
মন্দির আর পুরোহিত
দু’জনের মীমাংসায় গোটা দিন ঝরে যেত
ঠিক শেষমুহূর্তে বাজত ঘণ্টা
ঘণ্টা ও ঘণ্টারক্ষক ঘোর বাচাচ্ছিল,
ঘোর কাটার পর বুঝছি
পুতুলে যদি প্রাণ আসে
পুতুলের সর্বনাশ হয়!
নিয়মিত দানের বার্তা ফসকে গেল গ্রীষ্মকালে
বৈশাখে হারাল তারা
দেখলাম বার্তার মালিক মরেছে
তার নতুন সরাইখানায় উপচেছে পাপ
ঈশ্বর ছিঁড়ে দিলেন
এভাবে সুতো ছিঁড়ে যায়
নশ্বর স্বীকৃতি নেয়, অমৃত বুঝি বিষ হয়
দেহ মেশে মাটিতে অনন্তরা হিসেব চায় বলে


#



গড়মিলে এসে দেখলাম ভর্তি হাত ফাঁকা, লাল
কাস্তে ফেলে দিলাম জঙ্গলে
দেখলাম যে আমায় খুন করতে চায়
                     সে ভীষণ আপন
তাকে পথ করে দিলাম খুন ও স্নেহের
পৃথিবীতে শুধু দুটো পথ ভরাট ও মুক্ত
মুক্ততে জল জমে, ভরাটে উথলোয়
এই দুই অবস্থায় কান্নাকে আশ্বস্ত করে দেখলাম,
আমার যা ছিল তা নেই
আমার যা ছিল না তাই আছে
মাঝে মাঝে কিছু বহুরূপী খেলায়
জীবিকা ও জীবনসুলভ হয়েছি
ঈশ্বর পুতুলে প্রাণ দিক, খুব খেলুক
পুতুল যেন নিজেকে প্রাণী না ভাবে
এখানে ছন্দ আছে বলে
ছন্দ ভাঙার প্রয়াস এসেছে
যা থাকে না তা দ্বৈতবাসনার ঝুঁকি
যা থাকে তা মুক্তির হাতছানি
আমরা বাস্তবে অবাস্তব নিয়ে ঘুরি
তাই হাত-পা কাটে
আত্নহত্যার গদ্য রচিত হয়
মানুষ আসলে মাধ্যমের প্রতারক
               --প্রতারণার মাধ্যম

মানুষ আসলে পুতুলের বিবর্তন


রক্তচাপজনিত ৮

একা ও দোকা



ধারাবাহিকের পর পূর্বস্মৃতি ঘাটছি
অস্তিত্বের ভাগ কাউকে দিতে নেই
মানুষকে অন্তত নয়
আমাদের শেষোক্ত জীবনের ভূমিকা জটিল
তাই জানলায় চড়ুই –এর অস্থিরতা দেখি
ধরুন, একটা ভীষণ সিটে
দোকা হয়ে পেরোচ্ছেন পথ
পেরোতে পেরোতে আশ্রয় ও রসিকতার হাতছানি
আপনার মচকে যাওয়া পা
আপনার পুরুষ ঠিক করে দিচ্ছে
কারণ সে সম্পূর্ণটা নিজে ভাঙবে
আপনার প্রত্যাখ্যাত পুরুষ আপনার মধ্যে
ঢুকে পড়ছে বেনোজলের মতো
বেনোজল আর আপনি, আপনি আর বেনোজল
জেনেও, জলে ডুবে যাছে হাত-পা
আঠা, ঘোর, দম সব ছায়ায়-মায়ায় ঘিরে নিল
মৃত্যুর ঠিক আগে টের পেলেন একা হওয়া প্রয়োজন!
জলের ব্যবহারে আপনি কাহিল ও ভয়ার্ত
এ কাউন্টার শুধু আনন্দে চলে নয়া
এখানে ঝড়, রাজনীতী, ভর্তুকির ভয়াল রূপ আছে


#

শ্বাসমূল, কন্দমূল আর মূল
সকলে মূল তবু ভিন্ন শোষণ
নীতির জন্য রুচি বদলাচ্ছে
রুচির জন্য স্থান
একটি কুটিল চক্র
সনাতন প্রেমকে ভেতর থেকে খায়
জোঁকের মতো তার রক্তকালীন দুরাশা
একা থেকে দোকা, দোকা থেকে একা
খেলতে খেলতে এক নীল শিশুর
জন্মলগ্নের কান্না শোনা যায়...







3 comments:

  1. যে আমায় খুন করতে চায় সে ভীষণ আপন--- তাই তো হয়... শেষে নীল শিশুর জন্ম লগ্নের কান্না শুনতে পেলাম... ভাল লাগিল...@ অভিষেক

    ReplyDelete

Facebook Comments