রাদ আহমদের কবিতা
এরকম জনশ্রুতি
এরকম জনশ্রুতি আছে যে নদীর সমতলে গড়ে উঠা লাল
বিকালের গালে তুমি গাল রাখসিলে
এই কথা নিয়ে নতুন ভঙ্গিতে রসিকতাতে সক্ষম যিনি
তার চোখে চিকচিকে ধূর্ততা থাকার দরকার আছে
কেননা 'দাবায়া' রাখাটাকে মানে অন্য সহযাত্রীদের যদি
পিছনে না রাখলাম টেনে ধরে যদি পিছনে না রাখলাম তাইলে তো
পানি প্রবাহিত হবেনা যেটার জনশ্রুতি অনুযায়ী দরকার আছে
পুরানা নদীতে আরও যা যা দরকার আছে সেই পাহাড়ের কথা
বলতেসিলাম আমরা তার উপ্রে উপ্রে
দিয়ে দূত কতনা তাড়াহুড়ায়
গেসে ছুটে তার ঘোড়ার হাঁটুর মত তোমার উন্মুক্ত
হাঁটুখানা আর ক্রম ক্রম ফুলে ওঠা অভিমান
মেদ থেকে স্থিরতা যা জন্ম নিসে সেটা তো
দুর্গের বাইরে আৎকা আকাশের দিকে
তাকায়ে থাকা হতাশা ও সন্ধ্যাবেলা তোমার
হাঁটুতে কমলা দাগ হে প্রিয় ঘোটকিনী
কেন তুমি শর্টস পরে ছিলে দাঁড়ায়ে
বিকালে পাহাড়ের চত্বরের উপর?
... ... ...
চাঁদ চলে গেসে তার স্নিগ্ধতার সুগন্ধি মাখায়ে গত রাতে
মহাবিশ্ব দেখে গেল তার পৃথিবীটা ভালো আসে কিনা টর্চের বাতি জ্বালায়ে
এই কথা মনে ভাবি যে অনুরূপ আলো উষ্ণতা ও স্নিগ্ধতার সময়
পশ্চিমা বাতাসের যে ঘ্রাণের কথা আমি মাঝে মধ্যে ভাবি
দেখি সেই বাতাসের কথা অলরেডি বলে গেসেন কবি বিনয় মজুমদারে
উনি যাকে ব্যাবিলনীয় বাতাস বলসেন
সেটাকে মেডিটেরিনিয়ান বলে সম্বোধন করসিলাম কিন্তু
উনার কবিতায় রমণীর মত কার যেন বগলের পিছে মাংস ওয়ালা
অভিজ্ঞ নারীর মত আমার কবিতাতে কোনও রমণী নাই
আমার অবশ্য আছে ঘোটকিনী
যে কিনা মহাবিশ্বের টর্চের আলোতে কিংকর্তব্যবিমূঢ়
ঈষৎ ফুলতে থাকা চেহারাটা নিয়ে
আনন্দের ভঙ্গিতে দাঁড়ায়ে আসে পাহাড়ের চত্বরের উপর
... ... ...
তো এই যে মলিন লাল চাঁদ
জানলার বারান্দায় পিঁপড়ার সারির উপর
এসে লুটায়েছ লুইচ্চা মাতালের মত অপারগ
টেপা পুতুলের গায়ে আঁচর আঁচর তোমার কামড়ানোর কথাটা
ম্লান দোকানদারের চোখে অলমোস্ট
ছানি পড়ে গেসে
লাল মাটি । জনশ্রুতি আছে যে একদা এইখানে
বাঁকা ড্রাইভ ছিল লেইকের ধার দিয়া একতলা বাড়ি ছিল যার
বোগেনভেলিয়ার ঝাড়
কি কারণে যে গোলাপি রঙে ফুটে সেটা
জ্বল জ্বল করে ওই চত্বরের উপ্রে শুধু
ঘোরার চাকতির মত চকচকে চোখ না
সম্ভাবনার স্পার্কল টা না
সেই রহস্যটাও রেলিঙে ঠেস দিয়া থাকে
রিসাসিটিয়েশনে
জানিনা, হয়ত রিসাসিটিয়েশনে ওকে বাঁচানো সম্ভব ছিল
দীর্ঘ বারান্দার অন্য মাথায় গলাতে ফাঁস দেওয়া
মানুষ মানুষ পিঁপড়ার জীবনের মূল্যে তুমি বেসিনের পাশে যে মুহূর্তে
শালিক, গুঁইসাপ, বেজী - এরা সভ্যতাকে অপেক্ষাকৃত দেরীতে প্রত্যাখ্যান করেছে বিধায়
এদের আনাগোনাতে যে পেয়ারা গাছ - সুমধুর বোঝনদার মাতালের মত চুপচাপ
ফর্সাকালে সকালের গায়ে বিঁধে আছে তার ডালে কি কোনও শাঁকচুন্নি
প্রেতাত্মার বিস্ফোরিত চোখে তোমার জীবনের চেহারাকে দেখা দেখা বাঁচাতে বাঁচাতে
আরেকটা নিউক্লিয়ার যুদ্ধের সম্ভাবনা অথবা ধর্মের দোহাইয়ে পিটাতে পিটাতে
মৃতদেহ, সভ্যতাকে উগড়ে দেবার চাইতে পেয়ারা গাছ
জানিনা, সম্ভাবনাকে রিসাসিটিয়েশনে খুব
ভয় লাগে
বিশেষ করে বারান্দার লম্বা মাথায় যেখানে পিঁপড়ার সারি
পুরানো কালের
"...হায় গো সোনা বন্দে
কী দোষে কান্দাইল ..."
"পুরানো কালের" শব্দ জোড়া আসলে মলিন লুঙ্গি
তোমার এইখানে তো ঐসবের কিছু বাকী নাই
মানে "পুরানো দিনের" কথাটা বলতেসিলাম আমি
ঐগুলা সব গুড়ায়া গেসে অটোমেটিক ভাবে
যারা দুএকটা পয়সা কামাইতে চায় বাড়িগুলা
হোটেল হয়ে গেসে নৌকা থেকে নাইমা তোমার পুরানা
বান্দি তোমার বন্দে গেসে চলে
সাগর পাড়ায়া গেসে বড় বড় কাঠের জাহাজ
এইবার গেসে স্টিলের আকাশে পাখি .
তার ঘাড়ে চড়ে হায় গো সোনা
খোঁচা খোঁচা ইট
পোড়া ইটের পুরানা গা ভেঙ্গে গড়িয়ে পড়া লাল গুড়া
মাখানো বাতাস এসে জড়ো হওয়া
কাজের টেবিলে এসে জড়ো হওয়া গুড়া গুড়া দিন
পালকের নরম ঝাড়ুনি দিয়া
তারে মুছ তুমি
Great in a sense of abstract art form..
ReplyDelete