কুমারেশ তেওয়ারী

 

কুমারেশ তেওয়ারীর কবিতা


কারুমাঠ



হ্রেষাধ্বনীর শব্দ আছড়ে পড়তেই কারুমাঠে
শেকড় খুঁজছে বনচাঁড়াল
দেখছে ঘোড়ার কেশর থেকে বেরিয়ে আসছে জাগলারি

মেহফিল মাখতে গিয়ে যে বিশল্যকরণী
কালির মধ্যে বিনির্মাণ খুঁজে পেল
আর নিকোটিনের ঠোট থেকে মুছে ফেলল স্যাড সঙ
তার দরিয়ায় নৌকোটি টলায়মান ছিলো না কখনও

ফলে তার পায়ের কাছে যখন ঝরে পড়ছিল
রূদ্রপলাশ ও ভুজং মাঝির আনকোরা পিপাসা
তখন তাকে কপাট খুলে দেওয়া ছাড়া
আর কিই বা করার থাকতে পারে

কোমলগান্ধার


মাটির ভেতরে সদানন্দ মেখে রাতপাখি
হুটোপাটি খাচ্ছে তীর্যক চন্দ্রমা
যেখানে যেটুকু উদাসীন ছিল মাটিচাপা
তাদের নোঙরগুলি ধীরে ধীরে ছাড়িয়ে নিচ্ছে
মিথোলজির অভিশাপ স্বঘোষিত ঘুর্ণাবর্ত
মাটিও ভিজে যেতে যেতে খেলে যাচ্ছে অনায়াস
খেউড়গুলিও এখন খুব মিঠা শোনাচ্ছে



আঁধারে আলো


নিরন্ধ্র অন্ধকার বলে কি কিছু হয়?

সব অন্ধকারেরই তো আলো থাকে
আসলে তো মানুষের নেই কোনো নাইটভিজন
দেখতে পায়না বাড়ির কার্নিসে বসে
যখন রাতুল পা দোলায় অন্ধকার

তখন আদালতের অন্ধ বিচারের রানী
তার চোখের পটি সরিয়ে দেখে
গৃহযুদ্ধগুলি থেকে উঠে আসছে আবহমানের গান
গাছেরাও জমে থাকা পাথর সরিয়ে
সাজিয়ে রাখছে রান্নাঘর

যে সমস্ত নদী খুব খরস্রোতা ভাঙো ভাঙো শব্দ তুলে
খেতে চাইছে পাড়
অয়েদিপাউস কমপ্লেক্সে তারাই ভোগে আজীবন

তারা তো জানে না পোড়ামাটি
যে কোনো মনের থেকে তুলে আনতে পারে
ঝাউবন ও তার ভীষণ মন ভালো করা
সিরসিরানি

সুতরাং পুনশ্চ বলা যেতেই পারে
অন্ধকার মানে শুধু হ্রেষাধ্বনি নয়
একটা ব্যালকনি যাকে ধরে নিতে পারো
একটা নৌকার মতো যেখানে দাঁড়ালেই
শুনতে পাওয়া যায় আলো গাইছে মেলোডি


রঙ্গিলা রে


নিষিদ্ধ প্রয়োগে খুলে যাচ্ছে জান্নাতের রঙ
রঙ্গিলা রে তোর বেসিনে ঝড়ে পড়ছে যে প্রয়াগ
তার কোয়াগুলো থেকে উপচে পড়ছে রস
এক্সরে চিবোচ্ছে কোমলগান্ধার
আর দর্পহরণ থেকে জেগে উঠছে পরিসর
যেখানে বসতেই নত হচ্ছে বিজ্ঞানসম্মত
জানাচ্ছে তুর্কিনাচন ধার ধারেনা কোনো মনোবিকারের





কস্তুরী লো


খোলাচুল থেকে গন্ধ নেবে বলে তিলোত্তমা আলো

বরঞ্চ এখন রোদের মধ্যেই যে ছায়াময়
সে সম্বদ্ধে নিঃসন্দেহ হতে
বাতাসের গলায় ঝুলিয়ে দিচ্ছে পরোয়ানা

যেন তার খোঁজিয়াল চোখ দিয়ে
ত্রিভুবন খুঁজে এসে জানাতে পারে, প্রকৃতপক্ষে
বিষণ্ণ অপ্রাসঙ্গিক বলে কিছু নেই
তা সে চুল খোলাই থাক অথবা সে খোপার ভেতরে


মৃগনাভিবাসিত জঙ্গল প্রেম ছড়ালেই
ঝরে পড়তে থাকবে উত্তরাধিকার

No comments:

Post a Comment

Facebook Comments